রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫

‘ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ছড়ানো হচ্ছে বাংলাদেশবিরোধী প্রোপাগান্ডা’


নিজস্ব প্রতিবেদক photo নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২১-৬-২০২৫ রাত ১:৫২

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে অন্তর্র্বতী সরকারকে লক্ষ্য করে ছড়ানো হচ্ছে বাংলাদেশবিরোধী প্রোপাগান্ডা। ‘তামান্না আক্তার ইয়াসমিন’ নামে এমনই একটি ভুয়া অ্যাকাউন্টের কথা উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্ট তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে এক বিবৃতিতে জানায়, ভুয়া ওই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশবিরোধী প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে, যা মূলত অন্তর্র্বতী সরকারবিরোধী প্রচারণা এবং ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে করা হচ্ছে।

প্রেস উইং জানায়, গভীর অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই অ্যাকাউন্টটিতে পুরোপুরি মিথ্যা ও ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করা হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্র সচিব রীম আল-হাশিমির চুরি হওয়া ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে মিথ্যা পরিচয়ের মাধ্যমে এই প্রচারণা চালানো হচ্ছে। প্রোফাইল হোল্ডার এমনভাবে করা হয়েছে, যা দেখে অনুমান হতে পারে উচ্চ পর্যায়ের একজন আন্তর্জাতিক প্রচারক আওয়ামী লীগের পক্ষে সমর্থন করছে।

প্রোফাইলের মেটাডেটা বিশ্লেষণে জানা যায়, এটি গত বছরের ২৪ নভেম্বর তৈরি করা হয়েছে এবং বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত হচ্ছে। মাত্র সাত মাসে এই অ্যাকাউন্টে ১৪ হাজারেরও বেশি ফলোয়ার হয়েছে।

প্রোফাইলের ছবি, ভিডিও ও বর্ণনা সাধারণ ব্যবহারকারীদের এ ধারণা দিতে পারে যে, একজন প্রভাবশালী নারী নেতা, যিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করছেন।

ভুয়া ওই অ্যাকাউন্ট থেকে বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দেওয়া এক পোস্টে ‘তামান্না আক্তার ইয়াসমিন’ দাবি করেছে, সুইজারল্যান্ডের বিচারালয় রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৩৩৪ জনকে ক্ষমা করে দিয়েছে। তিনি আরও দাবি করেছেন, রাশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার চেম্বার কোর্টগুলো একই রায় দিয়েছে।

তার আরেকটি পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভারত ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বা করতে যাচ্ছে। পোস্টে আরও বলা হয়েছে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সাতটি নির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা নিয়ে একটি চিঠি পাঠাচ্ছে। তিনি এই মিথ্যাচারও করেছেন যে, জি-সেভেন সভায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার দেখা হয়েছে।

১৭ জুনের একটি পোস্টে তিনি দাবি করেছেন, আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশ সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাতিল করেছে। একইদিন আরেক পোস্টে তিনি বলেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ যাতে স্বাধীনভাবে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারে, তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।

তবে প্রেস উইং দাবি করেছে, ‘এসব দাবি সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা। অপপ্রচার ছড়ানোর উদ্দেশে তৈরি এই ধরনের সংবাদের কোনো সত্যতা নেই।’ বিবৃতিতে প্রেস উইং বলছে, সুইজারল্যান্ড, রাশিয়া বা অস্ট্রেলিয়ার চেম্বার কোর্টে রূপপুর প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ সম্পর্কিত কোনো মামলা হয়নি বা সেখানে রায় হয়নি।

এছাড়া ইনভেস্টিগেটিভ মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, রূপপুর প্রকল্প থেকে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আত্মসাৎ করা হয়েছে- এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন।

Parisreports / Parisreports